Header Ads

Header ADS

সঙ্গী যখন একটু বেশীই অভিমানী


রাগ কিংবা অভিমান মানুষের স্বাভাবিক আবেগ। চারপাশে নানান রকম মানুষ নিয়ে আমাদের বাস। নানান রকম মানুষের আবেগ অনুভূতি প্রকাশের ধরনও ভিন্ন।

কিছু মানুষ রাগ হলে চিল্লাচিল্লি করে কিংবা হাতের কাছে যা পায় ভাঙচুর করে। এই ধরণের মানুষের রাগ বোঝাটা সহজ হয়। তবে রাগ হলে যারা একেবারেই চুপসে যায়, নিজের ভেতর নিজেকে আরও গুটিয়ে নেয়, বিপদটা তাদেরকে নিয়ে। আর সে মানুষটা যদি হয় আপনার প্রিয়জন বা আপনার জীবনসঙ্গী তবে তো কথাই নেই।

হঠাৎ রেগে যাওয়া কিংবা অভিমান নিয়ে আমরা প্রায়ই নানান রকম আর্টিকেল পড়ে থাকি। সেখানে কিভাবে রাগ নিয়ন্ত্রণ করা যায় সে সম্পর্কে খুব সুন্দর করে ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। তবে যত কার্যকর উপায়ই বলে দেয়া হোক না কেন রাগের সময় অধিকাংশ মানুষেরই হিতাহিত জ্ঞান কাজ করেনা। তখন অত ক্যালকুলেটিভ ওয়েতে চিন্তা করে রাগ নিয়ন্ত্রণ করাটা কি আসলেই সবসময় সম্ভবপর হয়? 

এক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারেন আপনি। আপনার সঙ্গী যদি একটু বেশিই রাগী বা অভিমানী হয়ে থাকে তবে আপনাকেও হতে হবে একটু বেশীই সচেতন এবং কেয়ারিং।

সবার আগে মনে রাখবেন মানুষের মনোজগৎ গড়ে ওঠে প্রধানত দু'টি উপায়ে। প্রথমটি তার জন্মগত আর দ্বিতীয়টি তার বেড়ে ওঠার পারিবারিক এবং সামাজিক পরিবেশের উপর নির্ভর করে। যার কোনোটিই বদল করা আপনার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই প্রথমেই আপনার কাজটা হলো, মেনে নেয়া। হ্যাঁ, মন থেকে মেনে নিন। যে মানুষটাকে আপনি আপন করে নিয়েছেন, সে যেমন তার সবটুকু নিয়ে সেভাবেই তাকে আপন করে নিন।

কোনো কারণে যখন আপনার সঙ্গী অতিমাত্রায় রেগে যায় কিংবা অভিমান করে তখন তাকে একটু সময় দিন। সাথে সাথে সমাধান করতে যাবেন না। কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, এ ধরণের মানুষগুলো কিছুসময় পর একধরণের আত্মগ্লানিতে ভোগে। মনে মনে ভাবে, এতোটা রাগ না করলেও চলত। তখন সেও কিন্তু মনে মনে সমঝোতা করার একটা সুযোগ খুঁজতে থাকে।

                              

সঙ্গীর মান  ভাঙাতে রান্না করে ফেলুন তার প্রিয় কোনো খাবার। খাবার সুস্বাদু হোক কিংবা জঘন্য আপনার সঙ্গী কিন্তু ঠিকই বুঝবে, আপনিও সমঝোতা চাচ্ছেন।

স্যরি বলুন, ভুল আপনার থাকুক আর না থাকুক। মনে রাখবেন স্যরি বলা মানেই ছোট হওয়া নয় বরং তাতে আপনারই মনের উদারতা প্রকাশ পায়। এতে করে আপনার সঙ্গীও অনুশোচনায় ভুগবে যে, ভুল না থাকা সত্ত্বেও আপনিই স্যরি বলছেন।

আপনি বলতেই পারেন সবসময় আমিই কেন স্যরি বলবো। না, সবসময় আপনাকেই বলতে হবেনা। আপনি পাঁচ বার বললে আপনার সঙ্গীও নিশ্চই একবার বলবে।

কাজ হচ্ছেনা? লিখে ফেলতে পারেন প্রিয় মানুষটির জন্য কয়েকটা লাইন। কবিতার মান নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবেনা। বাজি ধরে বলতে পারি, কবিতার মান যত জঘন্য হবে প্রিয় মানুষটির রাগ ও তত দ্রুতই কমতে শুরু করবে।

যতক্ষণ পর্যন্ত আপনার সঙ্গীর রাগ বা অভিমান না কমছে, ততক্ষণ পর্যন্ত রাগের কারণ জানতে চাওয়া বা সে বিষয়ে কথা না বলাই ভালো। যখন সে স্বাভাবিক হয়ে আসবে তখন তাকে বুঝিয়ে বলুন যে, সে রাগ করলে আপনি কষ্ট পান। তার গোমড়া মুখ আপনাকে ভাল থাকতে দেয়না। কিন্তু ভুলেও তাকে সরাসরি দোষ দেবেন না বা তাকে ভুল প্রমাণের চেষ্টা করবেন না।  তাতে বরং হিতে বিপরীত হবে। 

আমরা অনেকসময় সঙ্গী রাগ হলে উল্টে নিজে আরও দ্বিগুণ রাগ করে বসি। কথা বন্ধ করে দেই, এমনকি আলাদা রুমেও চলে যাই। মনে রাখবেন, এতে কোনো সমাধান তো হবেই না বরং দূরত্ব বাড়বে। কথা বলা বন্ধ করে দিলে কিংবা অন্য রুমে চলে গেলে দু'জনের মধ্যে রাগ, অভিমান আরও ঘনীভূত হয় যা একসময় ইগোতে পৌঁছায়। তখন কাছে আসাটা আরও কঠিন হয়ে পড়ে। যার প্রভাব হতে পারে সুরদূরপ্রসারী।

রাগ অভিমান ভালোবাসারই বহিঃপ্রকাশ। আমরা তার উপরই বেশী রাগ বা অভিমান করি যার প্রতি আমাদের অধিকারবোধ বেশী থাকে, যাকে আমরা সবচেয়ে বেশী ভালোবাসি। তাই সঙ্গীর রাগ বা অভিমান কে নেগেটিভ করে না দেখে পজিটিভলি দেখুন।

দোষ, ভুল যারই থাকুক, সম্পর্কে রাগ অভিমান দুজনকেই পোড়ায়। তাই একজনের নমনীয়তা যদি সে আগুনে জল ঢালে তাতে ক্ষতি কারো নেই, বরং লাভ দু'জনারই। 

আরও পড়তে পারেন : https://rangdhonu85.blogspot.com/2019/07/blog-post_21.html

No comments

Powered by Blogger.